চোটজর্জর ক্যারিয়ারের কারণে মাঠের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে দিলেন বার্সেলোনায় সাত বছর কাটানো ফরাসি ডিফেন্ডার স্যামুয়েল উমতিতি। মাত্র ৩১ বছর বয়সে ফুটবলের বিদায় ঘোষণা করলেন বিশ্বকাপজয়ী এই খেলোয়াড়।
অনেক দিন ধরে মাঠের চেয়ে বাইরে বেশি সময় কাটাচ্ছিলেন উমতিতি। সেই বাস্তবতা মেনে নিয়ে এবার স্থায়ীভাবে ফুটবলের জীবনকে বিদায় জানিয়েছেন তিনি।
গত মৌসুম শেষে লিল ছাড়ার পর ক্লাব খুঁজছিলেন উমতিতি, কিন্তু চোটপ্রবণ ডিফেন্ডার হিসেবে তেমন কোনো ঠিকানা খুঁজে পাননি। ক্লাব ফুটবলে তার মূল পরিচয় বার্সেলোনার হয়ে—১৩ বছরের ক্যারিয়ারের ৭ বছর কাটিয়েছেন কাতালান ক্লাবে।
জন্ম ক্যামেরুনে হলেও দুই বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে চলে আসেন ফ্রান্সে। ৮ বছর বয়সে লিওঁর একাডেমিতে যোগ দিয়ে শুরু হয় ফুটবলার হয়ে ওঠার অধ্যাবসায়। যুব ও দ্বিতীয় দল পার হয়ে মূল দলে অভিষেক ঘটে ২০১২ সালে।
২০১৬ সালে বার্সেলোনায় পাড়ি জমান উমতিতি। কিছু সময় দারুণ পারফরম্যান্সে আলো ছড়ালেও চোট ও ফর্মের ওঠাপড়ার সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে তাকে। ২০২২ সালে চার বছরের চুক্তি নবায়ন হলেও পরপর চোটের কারণে ২০২৩ সালে চুক্তি শেষ হওয়ার আগেই ক্লাব ছাড়তে হয়।
লিলে যোগ দিলেও গত দুই বছরে খুব বেশি সময় মাঠে থাকতে পারেননি। তাই শেষ পর্যন্ত সেখানেই শেষ হলো তার ফুটবল যাত্রা।
সোমবার সামাজিক মাধ্যমে বিদায়ের ঘোষণা দেন উমতিতি, বলেন,
“উত্থান-পতনের তীব্রতায় ভরা ক্যারিয়ারের শেষে সময় এসেছে বিদায় জানানোর। আমি সবকিছু উজাড় করে দিয়েছি এবং কোনো আক্ষেপ নেই।”
তবু একইসঙ্গে তার কথায় ফুটে ওঠে হৃদয়ের মধ্যে জমে থাকা ব্যথা।
“লিলে ঘুরে দাঁড়ানোর সব চেষ্টাই করেছি। কেউ জানে কতটা কঠোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু শরীর প্রত্যাশা মতো সাড়া দেয়নি।”
ক্লাব ক্যারিয়ারে বার্সেলোনার হয়ে ১৩৩ ম্যাচ খেলেছেন উমতিতি। জিতেছেন দুটি লা লিগা, তিনটি কোপা দেল রে এবং দুটি স্প্যানিশ সুপার কাপ। তবে তার ফুটবল জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন নিঃসন্দেহে ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ জয়।
ফ্রান্সের হয়ে খেলেছেন মাত্র ৩১টি ম্যাচ, যার মধ্যে ২০১৬ ইউরো ও ২০১৮ বিশ্বকাপও রয়েছে। রাশিয়ায় বিশ্বকাপে ফ্রান্সের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন রক্ষণে। সেমি-ফাইনালে বেলজিয়ামের বিপক্ষে দ্বিতীয়ার্ধে তার হেডের গোল ফ্রান্সকে ফাইনালে পৌঁছে দেয়।
বিদায়বেলায় সেই সময় ফিরে দেখা যায় ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ে দেশমকেও।
“স্যাম ২০১৬ ইউরো থেকে আমাদের সঙ্গে ছিলেন এবং রাশিয়ায় বিশ্বকাপ জয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তার হেডের গোল সবার মনে থাকবে। হাঁটুর ব্যথা থাকলেও তার সাহসিকতা ও দৃঢ়তা অনুকরণীয় ছিল।”