প্রথমবার দেশের মাটিতে নারী কাবাডি বিশ্বকাপ বসবে, তবু বড় স্বপ্ন দেখছে না বাংলাদেশ।
নারী কাবাডি বিশ্বকাপের প্রথম আয়োজন নিয়ে অবশ্যই উন্মাদনা ও গর্ব আছে। কিন্তু ম্যাটের মূল লড়াই নিয়ে বাংলাদেশ ফেডারেশন, কোচ ও খেলোয়াড়দের দৃষ্টি বড় স্বপ্নের দিকে নয়—র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি আসল লক্ষ্য।
১১ দল নিয়ে সোমবার মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে শুরু হবে বিশ্বকাপ। ২০১২ সালে ভারতের পাটনায় প্রথম নারী কাবাডি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল, ১৩ বছর পর দ্বিতীয় আসরের অপেক্ষা।
মূলত ১৪ দল অংশ নেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আর্জেন্টিনা, জাপান, নেদারল্যান্ডস ও দক্ষিণ কোরিয়া শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়ায়। স্ট্যান্ডবাই থাকা পাকিস্তান ও পোল্যান্ডের মধ্যে সুযোগ পেয়েছে কেবল পোল্যান্ড।
বাংলাদেশ, ভারত, চাইনিজ তাইপে, জার্মানি, ইরান, কেনিয়া, নেপাল, পোল্যান্ড, থাইল্যান্ড, উগান্ডা ও জাঞ্জিবার অংশ নিচ্ছে। শনিবার সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন এদিনই দল ঘোষণা করে।
দলে আছেন: শ্রাবনী মল্লিক, বৃষ্টি বিশ্বাস, রূপালি আক্তার (সিনিয়র), স্মৃতি আক্তার, রেখা আক্তারী, মেবি চাকমা, রূপালি আক্তার, আঞ্জুয়ারা রাত্রি, সুচরিতা চাকমা, খাদিজা খাতুন, লোবা আক্তার, ইয়াসমিন খানম, ইসরাত জাহান সাদিকা ও তাহরিম।
স্ট্যান্ডবাই: আফরোজা ও লুম্বিনী চাকমা। কোচ: শাহনাজ পারভীন মালেকা ও আরদুজ্জামান মুন্সি।
রূপালি আক্তার সিনিয়রের অধিনায়কত্বে দলের নেতৃত্ব দেবেন। তার জন্য এই বিশ্বকাপ আনন্দেরও, বেদনারও। প্রথমবার দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি, আর একই সাথে এই টুর্নামেন্ট দিয়েই প্রিয় কাবাডিকে বিদায় বলবেন।
“২০০৯ সাল থেকে কাবাডি খেলছি। বিশ্বকাপে অধিনায়ক হতে পেরে ভালো লাগছে। এর আগে কখনও অধিনায়কত্ব পাইনি। খেলোয়াড়ী জীবনের ইতি টানার আগে এই মুহূর্ত বিশেষ।”
তিনি আরও বলেন, “এত বড় টুর্নামেন্টে সব দলই ভালো করার চেষ্টা করবে। ভারত, ইরান, চাইনিজ তাইপে শক্তিশালী। নেপাল, থাইল্যান্ডও ভালো দল। প্রথম বিশ্বকাপে পঞ্চম হয়েছিলাম, এবার তার থেকেও ভালো কিছু করতে চাই।”
প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত, রানার্সআপ ইরান।
বাংলাদেশ কোচ আরদুজ্জামান মুন্সি পদকের স্বপ্ন দেখছেন।
“অনুশীলনে ত্রুটি ছিল না। ধারাবাহিকভাবে অনুশীলন করেছি বিকেএসপিতে। আমাদের দেশে খেলা, উৎসাহ-উদ্দীপনা বেশি। অন্তত একটি পদক পাবো—এই আশায় প্রস্তুত হয়েছি। দেশকে পদক উপহার দিতে পারব বলে আশাবাদী।”
কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এসএম নেওয়াজ সোহাগ এতটা আশা করছেন না। সাম্প্রতিক যৌন হয়রানির অভিযোগের প্রেক্ষিতে এখন মূল মনোযোগ নিরাপদ ও সফলভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন।
“নারীদের র্যাঙ্কিংয়ে আমরা পঞ্চম। এই বিশ্বকাপ দিয়ে আরও উপরে উঠার সুযোগ আমাদের সামনে। দলের মূল প্রত্যাশাও এটি।”
“এবার প্রথম বাংলাদেশ নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজন করছে। আয়োজক হিসেবে আমাদের লক্ষ্য সফলভাবে সবকিছু সম্পন্ন করা। খেলা পরিচালনার জন্য সব দেশে থেকে রেফারি আনা হয়েছে। ভারত থেকে পাঁচ জন রেফারি। এছাড়া দেশের ১০-১২ জনের টেকনিক্যাল কমিটি আছে, যারা সবকিছু তদারকি করবেন। নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহ এই আয়োজন দিয়ে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করতে চাই।”