BN

লিটনের ক্ষোভের বিস্ফোরণ, প্রশ্নের মুখে বোর্ড–নির্বাচক

লিটনের ক্ষোভের বিস্ফোরণ, প্রশ্নের মুখে বোর্ড–নির্বাচক

শামীম হোসেনের বাদ পড়া এবং সেই প্রক্রিয়া নিয়ে অধিনায়ক যেভাবে উগড়ে দিলেন

শামীম হোসেনের বাদ পড়া এবং সেই প্রক্রিয়া নিয়ে অধিনায়ক যেভাবে উগড়ে দিলেন ক্ষোভ, তা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে বিরল ঘটনা।

ব্যাট হাতে ২২ গজে লিটন কুমার দাসের রুদ্র রূপ বহুবার দেখা গেছে। এবার সেই চেহারা দেখা গেল সংবাদ সম্মেলনে—পাথুরে মুখ, ক্ষুব্ধ কণ্ঠ। জলন্ত আগ্নেয়গিরির মতোই বের হয়ে এলো কথার লাভা, যেন নির্বাচক কমিটিকে ছারখার করে দিতে চাইলেন।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজকে কেন্দ্র করে সাধারণত উত্তেজনা তেমন থাকেনি। কিন্তু চট্টগ্রামে সিরিজ শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনই বিতর্কের আগুন ছড়িয়ে দিল।

শুরুটা ধীর, প্রথাগত প্রশ্ন ও উত্তর দিয়ে। দল থেকে বাদ পড়া শামীমের প্রসঙ্গ উঠতেই সবকিছু বদলে গেল।

লিটন সরাসরি জানালেন, শামীমকে বাদ দেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়া। অধিনায়ক হিসেবে এতে তিনি আহত হয়েছেন, তা তিনি লুকালেন না।

“(শামীম) থাকলে অবশ্যই ভালো হতো। ইটস নট মাই কল, টোটালি সিলেক্টরস কল। আমি জানি না কেন… তবে নির্বাচকরা আমাকে কোন কিছু নোটিশ ছাড়া শামীমকে বাদ দিয়ে দিয়েছে দল থেকে… উইদাউট এনি নোটিশ। আমি এতদিন জানতাম যে একটা দল যখন কেউ হ্যান্ডল করে, অন্তত অধিনায়ক জানে কোন ক্রিকেটার কখন দলে আসবে, কখন বাইরে যাবে।”

“আমি আশা করি, বাংলাদেশের প্রত্যেক ক্রিকেটারই সেরা। সেইজন্যই তারা জাতীয় দলে আছে। যে ১৫ জনই নেওয়া হোক, তারাই ভালো করবে। তবে শামীমকে বাদ দেওয়ার পেছনে কোনো কারণ আমি দেখি না। জানিও না, কেন বাদ পড়েছে সে।”

দল ঘোষণার পর প্রধান নির্বাচকের সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে লিটন শীতল কণ্ঠে জানালেন:

“উত্তরটা আমি দিয়ে দিয়েছি না…?”

শামীমের জায়গায় দলে নেওয়া হয়েছে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে। যদিও দুজনের ভূমিকাই ভিন্ন। শামীম মূলত ফিনিশার, আর মাহিদুল মূলত মিডল অর্ডারে চার-পাঁচ নম্বরে খেলবেন। প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন জানিয়েছেন, এটি মিডল অর্ডারকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনা।

শামীমকে বাদ দেওয়ায় মিডল অর্ডারে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান না থাকার সমস্যা দেখা দিয়েছে। লিটন সরাসরি নির্বাচকদের দিকে আঙুল তোলেন:

“গুড পয়েন্ট, আমার মনে হয় এটা আমাদের ভাবা উচিত। আপনার মাথায় এসেছে এই ব্যাপারটি… সিদ্ধান্তটা শেষ পর্যন্ত যদি আমাদের ওপর থেকে আসতো, খুব ভালো হতো। কারণ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আপনাকে ডানহাতি-বাঁহাতির সমন্বয় করতে হবে।”

“দেখা যাক যে ক্রিকেটারগুলো দলে আছে, তারা সেরা এবং আমি বিশ্বাস করি, যারা দলে আসবে তারা সেরা। তারা ডেলিভার করার চেষ্টা করবে।”

বিভিন্ন দেশে অধিনায়ককে নির্বাচক কমিটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে দেখা যায়। বাংলাদেশে তা নেই। তবে দলের নির্বাচন আগে কোচ ও অধিনায়কের মতামত নেওয়াই প্রচলিত। কিন্তু লিটন জানিয়েছেন, সম্প্রতি তাকে বলা হয়েছে অন্যরকম:

“আমাকে পুরোপুরি বলা হয়েছে, সিলেক্টর প্যানেল এবং বোর্ড থেকে যে দলটা দেওয়া হবে, আমি সেই দল নিয়েই খেলব। এখানে আমার বলার কিছু নেই যে আমি কোন ক্রিকেটার চাই বা চাই না। এতদিন আমি জানতাম, অধিনায়কের একটা দল গোছানোর পরিকল্পনা থাকে। সম্প্রতি জানতে পারলাম, আমাকে যা দেওয়া হবে, সেই দল নিয়েই কাজ করতে হবে।”

অধিনায়কের জন্য বিষয়টি অপমানজনক কি না, সে গভীরে যাননি। তবে তার ভেতরের আঘাত প্রকাশ পেল:

“ইনসালটিং… জায়গা বলব না। তবে আমার মনে হয়, কোচ ও অধিনায়ককে জানা উচিত। সেই জায়গা থেকে আমরা কিছুই জানি না। যদি বিশ্বকাপেও একই ঘটনা ঘটে, আমাকে দেওয়া দল থেকেই চেষ্টা করতে হবে।”

প্রশ্নের ঘুরাঘুরি চলতেই থাকে। টি-টোয়েন্টি দলটি ধারাবাহিকতায় তৈরি হচ্ছিল। কিন্তু বিশ্বকাপের আগে শেষ সিরিজে হঠাৎই ঝড়!

লিটন চেষ্টা করেন দলকে আগলে রাখতে, তবে নিজের টালমাটাল ভাব ফুটে উঠে। শামীমের মতো উদ্ভাবনী, আগ্রাসী ব্যাটসম্যানরা বাংলাদেশে বিরল। তাদের পাশে না থাকা অধিনায়ককে পীড়িত করেছে।

“(এই ঘটনা) দলকে হয়তো ডিস্টার্ব করবে না। তবে হতাশাজনক। প্রত্যেক ক্রিকেটারের কাছে প্রতিটি সিরিজে পারফরম্যান্স আশা করা সম্ভব নয়। আমরা চেষ্টা করেছি দলটা গোছানোর জন্য। শামীম কিন্তু দুই-তিন সিরিজে অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছে, যা আমাদের দরকার ছিল। সে ক্ষেত্রে বাদ পড়াটা হতাশাজনক।”

“অধিনায়ক হিসেবে… আমিও, আমি সরি… আর কিছুই বলতে পারব না। আমি কখনো আশা করি না, ১৫ জনই প্রতিদিন পারফর্ম করবে। দুই-তিন সিরিজে পারফর্ম না করলে পাশে থাকা উচিত। আমি সত্যিই সরি যে তাকে ‘ব্যাক’ করতে পারিনি।”

লিটনের ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী, এই ঘটনার পর তিনি অধিনায়ক থাকবেন কি না, তার তৎক্ষণাৎ উত্তর:

“ওটা পরে দেখা যাবে…”

কিন্তু সংবাদ সম্মেলন থেকে বেরিয়ে ড্রেসিং রুমে যাওয়ার পথে তিনি বললেন:

“বিশ্বকাপ পর্যন্ত আমি (অধিনায়ক) থাকি কি না, দেখেন…”

সর্বশেষ সংবাদ

ফিফা বিশ্বকাপ-২০২৬-এর মূল ট্রফি দেখার এবং তার সঙ্গে ছবি

১৩ মিলিমিটার ঘাসে মোড়া সবুজ উইকেটে দিনজুড়ে ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী

প্রথম দিনের বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই দ্বিতীয় দিনেও

ফুটবল

ফিফা বিশ্বকাপ-২০২৬-এর মূল ট্রফি দেখার এবং তার সঙ্গে ছবি তোলার

ক্রিকেট

১৩ মিলিমিটার ঘাসে মোড়া সবুজ উইকেটে দিনজুড়ে ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী উপহার

ক্রিকেট

প্রথম দিনের বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই দ্বিতীয় দিনেও প্রযুক্তি

ফুটবল

নেইমারের সঙ্গে সান্তোসের চুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হতে