ভারতের হয়ে ৩৭টি টেস্ট খেলা সাবেক ব্যাটসম্যান সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের মনে হয়, দেশের কন্ডিশন এখনকার ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের কাছে যেন একেবারেই অচেনা।
ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষকে স্পিনের ফাঁদে ফেলতে ওস্তাদ ভারতই গত এক বছরে সেই একই জালে নিজেই জড়িয়ে পড়েছে। নিজেদের পরিচিত কন্ডিশনেই নিউ জিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনে কাবু হয়েছে তারা। চেনা পরিবেশে এভাবে ধসে পড়ার পেছনে দুটি বড় কারণ দেখছেন মাঞ্জরেকার, যিনি এখন ধারাভাষ্যকারও।
গত বছরের নভেম্বরে তিন ম্যাচের সিরিজে নিউ জিল্যান্ডের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল ভারত। এক যুগ পর ঘরের মাঠে কোনো টেস্ট সিরিজে সেটাই ছিল তাদের প্রথম হার।
পরে সেই ব্যর্থতা ভুলে এ বছর নিজেদের ঘরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুই ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছিল ভারত। কিন্তু নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নেমে আবারও ভেঙে পড়ে দলটি।
কলকাতায় স্পিন সহায়ক উইকেটে মাত্র তিন দিনেই ৩০ রানে হেরে যায় ভারত। এরপর গুয়াহাটিতে আরও বড় বিপর্যয়—৪০৮ রানের রেকর্ড ব্যবধানে পরাজয়, যা ঘরের মাঠে তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হার।
এক বছরের ব্যবধানে ঘরের মাঠে দুটি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ায় এখন ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। দলের পারফরম্যান্স ও কৌশল নিয়ে হচ্ছে নানা বিশ্লেষণ। সেই আলোচনায় এবার যুক্ত হলেন মাঞ্জরেকারও।
ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় মাঞ্জরেকার বলেন, ঘরের মাঠে বর্তমান ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের তাকে এখন ‘প্রবাসী’ মনে হয়। দেশের কন্ডিশন যেন তাদের কাছে ক্রমেই অচেনা হয়ে উঠছে।
তিনি বলেন, “দুটি কারণে ভারত ঘরের মাঠে নিউ জিল্যান্ডের কাছে ৩-০ আর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ২-০ হেরেছে। আর মজার বিষয় হলো, দুই দলই তাদেরকে পেস, সুইং বা বাউন্স দিয়ে হারায়নি—স্পিন দিয়েই হারিয়েছে।”
মাঞ্জরেকার ব্যাখ্যা করেন, “ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রচুর রান করে একজন ব্যাটসম্যান যখন জাতীয় দলে আসে, তাকে দেখে মনে হয় যেন সে একটা প্রবাসীর মতো। মনে হয় ঘরের মাঠে খেলাই হয়নি তার। ভারতীয়দের দেখে মনে হয় যেন তারা বিদেশে খেলছে।”
এরপর তিনি আরেকটি বড় কারণ তুলে ধরেন—নিজেদের মাটিতে অভিজ্ঞতার অভাব।
“পরিসংখ্যান বলছে, ইয়াশাসভি জয়সওয়াল, লোকেশ রাহুল, শুবমান গিল, রিশাভ পান্ত—এদের মতো ব্যাটসম্যান গত দুই বছরে দেশের বাইরে ৯ থেকে ১২টি টেস্ট খেলেছে, কিন্তু ভারতে খুব কম ম্যাচ খেলেছে। ঘরের মাঠে টেস্ট খেলতে নেমে তারা প্রথম শ্রেণির ম্যাচও খুব কম খেলেছে। ফলে প্রস্তুতি দুর্বল থাকে, আর এই ধরনের পিচে সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা না থাকার কারণেও তারা সমস্যায় পড়ে।”