গুয়াহাটি টেস্ট জিততে শেষ দিনে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার আরও ৮ উইকেট। অন্যদিকে ম্যাচ বাঁচাতে কিংবা জিততে ভারতের সামনে পাহাড়সম বড় লক্ষ্য—৫২২ রান।
দুই ইনিংসেই হতাশা সঙ্গী হলো ট্রিস্টান স্টাবসের। প্রথম ইনিংসে ফিফটি মিস করেছিলেন এক রানের জন্য, এবার সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়েও থামতে হলো তাকে। তবে তার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করেই ভারতকে কার্যত অসম্ভব এক লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দিনের শেষ দিকে ভারতের দুই ওপেনারকে তুলে নিয়ে স্বাগতিক শিবিরে চাপ বাড়িয়ে মাঠ ছাড়ে প্রোটিয়ারা।
মঙ্গলবার দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেটে ২৬০ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ইনিংসের ২৮৮ রানের লিড যোগ হয়ে ভারতকে দেওয়া হয় ৫৪৯ রানের বিশাল লক্ষ্য।
এই লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা একেবারেই ভালো হয়নি ভারতের। ১৫.৫ ওভারে ২৭ রান তুলতেই হারিয়ে ফেলেছে দুই ওপেনারকে।
এখন ম্যাচ জিততে শেষ দিনে দক্ষিণ আফ্রিকার চাই ৮ উইকেট, আর ভারতের দরকার বাকি ৫২২ রান।
কলকাতার স্পিন-বান্ধব উইকেটে ভারতকে হারানোর পর প্রোটিয়ারা সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখছে। বিপরীতে রিশাভ পান্তের দলের সামনে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর কঠিন লড়াই।
টেস্টের ১৪৮ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজের—৪১৮ রান। ভারতের নিজস্ব সেরা ৪০৩ রান তাড়া করে জয় পেয়েছিল ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে। সুতরাং গুয়াহাটিতে এমন কীর্তি ছোঁয়া যে প্রায় অসম্ভব, তা বলাই যায়।
স্টাবস ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও ৯৪ রানে থেমেছেন। ১৮০ বলে করা তার ইনিংসে ছিল ৯ চার ও ১ ছক্কা। টনি ডি জর্জি করেন ৪৯ রান। ভারতের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট নেন রাভিন্দ্রা জাদেজা।
দিন শুরু হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ২৬ রানে বিনা উইকেটে। সেখান থেকে দুই সেশন টিকে ব্যাট করেছে তারা। রায়ান রিকেলটনের ৩৫ রানের ইনিংস ভাঙেন জাদেজা। কিছুক্ষণ পর এইডেন মার্করামকেও বোল্ড করে ফেরান তিনি। টেম্বা বাভুমাকে ফেরান ওয়াশিংটন সুন্দর।
ডি জর্জি ও স্টাবস এরপর ১০১ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন। ডি জর্জি ফিফটির আগে জাদেজার বলে এলবিডব্লিউ হন। কিছুক্ষণ পর স্টাবসও স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন—সেঞ্চুরি মিস করে। দক্ষিণ আফ্রিকা এরপরই ইনিংস ঘোষণা করে। ভিয়ান মুল্ডার ৩৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।
লক্ষ্য তাড়ায় ভারতকে ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি ইয়াশাসভি জয়সওয়াল। মার্কো ইয়ানসেনের বলে কাট করতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হন তিনি। এরপর সাইমন হার্মারের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফেরেন লোকেশ রাহুল।
দিনের বাকি সময় কোনো বিপদ ছাড়াই কাটিয়ে দেন সাই সুদার্শান ও নাইটওয়াচম্যান কুলদিপ যাদব।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
- দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৪৮৯
- ভারত ১ম ইনিংস: ২০১
- দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ইনিংস: ৭৮.৩ ওভারে ২৬০/৫ ডিক্লে. (আগের দিন ২৬/০) (রিকেলটন ৩৫, মার্করাম ২৯, স্টাবস ৯৪, বাভুমা ৩, ডি জর্জি ৪৯, মুল্ডার ৩৫*; বুমরাহ ৬-০-২২-০, সিরাজ ৫-১-১৯-০, জাদেজা ২৮.৩-৩-৬২-৪, কুলদিপ ১২-০-৪৮-০, ওয়াশিংটন ২২-২-৬৭-১, জয়সওয়াল ১-০-৯-০, নিতিশ ৪-০-২৪-০)
- ভারত ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৫৪৯) ১৫.৫ ওভারে ২৭/২ (জয়সওয়াল ১৩, রাহুল ৬, সুদার্শান ২, কুলদিপ ৪; ইয়ানসেন ৫-২-১৪-১, মুল্ডার ৪-১-৬-০, হার্মার ৩.৫-২-১-১, মহারাজ ৩-১-৫-০)