তৃতীয় টেস্টেও মিডল অর্ডারে নিজের জায়গা ধরে রেখেছেন জশ ইংলিস। পাশাপাশি অ্যাডিলেড টেস্টে দলে ফিরছেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ও অভিজ্ঞ স্পিনার নাথান লায়ন।
তবে বড় চমক হয়ে এসেছে উসমান খাজাকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত। অ্যাডিলেডে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে তাকে দলে রাখা হয়নি, যা অস্ট্রেলিয়ার হয়ে তার শেষ ম্যাচ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি করেছে। নির্বাচকরা মূলত জেক ওয়েদারাল্ড ও ট্রাভিস হেডের আক্রমণাত্মক ওপেনিং জুটির ওপর আস্থা রেখেছেন।
আগেই ধারণা করা হয়েছিল, এই ম্যাচে মাইকেল নেসার ও ব্রেন্ডন ডগেটের জায়গায় দলে ফিরবেন কামিন্স ও লায়ন—সেটাই হয়েছে।
পার্থে পাওয়া পিঠের খিঁচুনির কারণে পুরোপুরি সুস্থ না হওয়ায় ব্রিসবেনে দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে পারেননি খাজা। সেই ইনজুরির কারণেই তিনি দুই ইনিংসেই ওপেন করতে ব্যর্থ হন।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে খাজা জানান, তিনি শতভাগ ফিট এবং দলে নিজের জায়গা ধরে রাখতে আগ্রহী। এমনকি মিডল অর্ডারে খেলার সম্ভাবনাও আলোচনায় এসেছিল। তবে নির্বাচকরা জশ ইংলিসকেই রেখে ওয়েদারাল্ড ও হেডের ওপেনিং জুটি অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
পার্থ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে রান তাড়ায় এই দুই ওপেনার ৭৫ রানের জুটি গড়েন। এরপর গাব্বায় প্রথম ইনিংসে যোগ করেন আরও ৭৭ রান। নির্বাচকদের মতে, এই জুটি ইংল্যান্ডের বোলিং আক্রমণের ওপর স্পষ্ট প্রভাব ফেলেছে।
কামিন্স বলেন,
“প্রথম টেস্টের পর ট্রাভিস ওপেন করা শুরু করায় আমাদের ব্যাটিংয়ে বড় একটা ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। ওয়েদারাল্ডের সঙ্গে তার জুটি দারুণ দেখাচ্ছে। এই কারণে মিডল অর্ডারে কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন মনে হয়নি।”
তিনি আরও যোগ করেন,
“ওরা দুজনই খুব ভালোভাবে স্কোরবোর্ড সচল রাখতে পারছে। প্রতিপক্ষ যা-ই ছুড়ে দিচ্ছে, তারই জবাব তারা দিচ্ছে। এতে আমাদের ইনিংসের ভিত্তিটা শক্ত হচ্ছে।”
“এরপর মার্নাস লাবুশেন ও স্টিভ স্মিথ এসে সেই গতিটা ধরে রাখতে পারছে এবং ভালো শুরু পাচ্ছে। এটা প্রতিপক্ষকে পুরোপুরি বিভ্রান্ত করেছে কি না জানি না, তবে আমাদের জন্য দারুণ মোমেন্টাম তৈরি করেছে।”
অ্যাডিলেড টেস্ট চলাকালীন ৩৯ বছরে পা দেবেন খাজা। ২০২৩ অ্যাশেজের পর থেকে তিনি ৪৫ ইনিংসে গড়ে ৩১.৮৪ রান করেছেন, যেখানে রয়েছে একটি মাত্র সেঞ্চুরি।
খাজা কি আবার দলে ফেরার সুযোগ পাবেন—এমন প্রশ্নে কামিন্স বলেন,
“হ্যাঁ, সম্ভাবনা অবশ্যই আছে। নির্বাচকরা প্রতিটি ম্যাচ আলাদাভাবে দল বেছে নিচ্ছেন। বোলারদের ক্ষেত্রেও তো আমরা এই ম্যাচে পরিবর্তন করেছি।”
তিনি আরও বলেন,
“নাথান লায়ন ফিরছে। খাজা ওপেনিং ও মিডল অর্ডার—দুই জায়গাতেই রান করার সামর্থ্য রাখে। যদি আমরা মনে করতাম ও দলে ঢোকার মতো নয়, তাহলে সে স্কোয়াডেই থাকত না। প্রয়োজনে ভবিষ্যতে তার ফেরার পথ অবশ্যই খোলা আছে।”
এদিকে, ইনজুরির ধকল সামলেও সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকার বিষয়টি প্রশংসার সঙ্গে উল্লেখ করেন কামিন্স। নিজে এখনো সিরিজে না খেললেও এবং জশ হ্যাজেলউড পুরো সিরিজ থেকে ছিটকে গেলেও দল ভালো করছে বলে মনে করেন তিনি।
কামিন্স বলেন,
“এটা অবিশ্বাস্য। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে ফাস্ট বোলিংয়ের গভীরতা কতটা ভালো, সেটাই প্রমাণ করে।”
“আমি ফিরে এসেছি, নেসার ও ডগেট বিশ্রামে থাকলেও তারা সিরিজে নিজেদের জায়গা তৈরি করেছে। শেষ দুই ম্যাচে তারা প্রস্তুত থাকবে।”
“ঝাই রিচার্ডসনকেও অনুশীলনে দেখছি। মনে হচ্ছে আমরা সিরিজের শেষ দিকে ঝুলে না থেকে বরং সেরা ফর্মে উঠছি।”
সোমবার অসুস্থতার কারণে অনুশীলন মিস করেন স্টিভ স্মিথ। তবে মঙ্গলবার নেটে সবার আগে ব্যাটিং অনুশীলনে নামেন তিনি।
অ্যাশেজ তৃতীয় টেস্টে অস্ট্রেলিয়া একাদশ
- জেক ওয়েদারাল্ড
- ট্রাভিস হেড
- মার্নাস লাবুশেন
- স্টিভ স্মিথ
- ক্যামেরন গ্রিন
- অ্যালেক্স ক্যারি (উইকেটকিপার)
- জশ ইংলিস
- প্যাট কামিন্স
- মিচেল স্টার্ক
- নাথান লায়ন
- স্কট বোল্যান্ড