অনেক উচ্চাশা ও গর্জনের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েও ইংল্যান্ডের বর্ষণ হলো নগণ্য। মাত্র ১১ দিনে অ্যাশেজে হেরে বেন স্টোকস স্বীকার করলেন স্বপ্নভঙ্গের বেদনা।
মাস তিনেক আগে এই অ্যাশেজ নিয়ে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম বলেছিলেন, “আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় সিরিজ।” সেই কথার প্রতিধ্বনি ছিল অধিনায়ক বেন স্টোকসের কণ্ঠেও। স্বপ্ন, প্রত্যাশা, লক্ষ্য—all এসব নিয়ে অস্ট্রেলিয়া পা রাখার পরও তিনি অনেক কথা বলেছিলেন। কিন্তু তিনটি টেস্ট আর ১১ দিনের খেলা শেষ হওয়ার পর স্টোকস ঠোঁটে প্রকাশ পেল হতাশার গল্প।
২০১০-১১ অ্যাশেজে শেষবার অস্ট্রেলিয়া থেকে সিরিজ জিতেছিল ইংল্যান্ড। এবারের সিরিজ ছিল সেই সাফল্যের পুনরাবৃত্তির সবচেয়ে বড় সুযোগ। ইংলিশ মিডিয়ায় অস্ট্রেলিয়া দলকে ‘বুড়ো’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। গ্রেট স্টুয়ার্ট ব্রড বলেছিলেন, “গত ১৫ বছরের সবচেয়ে বাজে অস্ট্রেলিয়া দল এটি।”
কিন্তু সেই অস্ট্রেলিয়া দলই, প্রথম দুই টেস্টে অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ছাড়া, তৃতীয় টেস্টে স্টিভেন স্মিথ ছাড়া, এবং অভিজ্ঞ বোলার জশ হেইজেলউডকে ছাড়া, তিনটি টেস্টেই জয়ী হয়ে দেখাল কৌশলের পার্থক্য।
ম্যাচ শেষে স্টোকস নিজের হতাশার কথা জানালেন, কিন্তু পরের দুই টেস্টে হাল না ছাড়ার প্রতিশ্রুতিও দিলেন।
“যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা এখানে এসেছিলাম, তা এখন শেষ। এটি চরম হতাশার। সবার হৃদয় পুড়ছে, সবাই কষ্ট পাচ্ছে। তবে আরও দুটি ম্যাচ বাকি আছে এবং মনোযোগ এখন সেদিকে। আমরা একটি লক্ষ্য নিয়ে এসেছিলাম, কিন্তু তা অর্জন করতে পারিনি। খারাপ লাগছে, জঘন্য। তবে আমরা এখানেই থামছি না।”
তিনি দুই দলের পার্থক্য দেখেন মূলত পরিকল্পনার ধারাবাহিক বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে।
“পরিকল্পনা ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়ন করতেই পার্থক্য। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং—সব জায়গায় অস্ট্রেলিয়া আমাদের চেয়ে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে। ক্রিকেট খেলা নির্ভর করে এসবের ওপর, আর অস্ট্রেলিয়া এখানে আমাদেরকে অনেক উচ্চ পর্যায়ে ধাক্কা দিয়েছে। আমরা কিছু কিছু সময়ে ভালো করেছি, কিন্তু ধারাবাহিক হতে পারিনি।”
স্টোকস ২০২২ সালে নেতৃত্ব নিয়েছেন এবং দুই বছরের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে সই করেছেন। সিরিজের ফলাফল যাই হোক, নেতৃত্ব ছাড়ার বা খেলা শেষ করার ইচ্ছে তার নেই। সিরিজ হারের পরও তিনি জানালেন, আগের ভাবনায় কোনো পরিবর্তন নেই। বরং শেষ দুই টেস্টে সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটানোর প্রত্যয় তার কণ্ঠে ফুটে উঠেছে।
“যদিও ফলাফল আমাদের পক্ষে আসেনি, এই ম্যাচ থেকে আমরা অনেক কিছু পরবর্তী দুই ম্যাচে নিতে পারব। দল হিসেবে নিজেদের সম্পর্কে অনেক কিছু শিখেছি। ধারাবাহিক ও নির্বিঘ্ন হতে পারিনি। অস্ট্রেলিয়ায় তাদের সঙ্গে লড়তে আমাদের যতটা ভালো হওয়া উচিত ছিল, আমরা ততটা ছিলাম না। স্কোরলাইনেই তা স্পষ্ট।”
“তবে আরও দুটি ম্যাচ আছে। অনেক কিছু এখনও বাকি। আমরা ভেঙে পড়ব না, শুধু খেলব না। মাঠে সবটুকু উজাড় করে দেব। অনেক সমর্থক দেশ থেকে এসেছে, শেষ দুই ম্যাচেও থাকবে। তাদের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব আমরা।”