হংকং ১-১ বাংলাদেশ
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের তৃতীয় রাউন্ডে হংকংয়ের সঙ্গে ১-১ সমতায় ড্র করল বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে দারুণ আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছে লাল-সবুজরা। একাধিক গোলের সুযোগ তৈরি করলেও সেগুলো কাজে লাগাতে না পারায় জয় অর্জন সম্ভব হয়নি। এই ড্রয়ের ফলে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশের আশা প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ
প্রথমার্ধে উভয় দলই কিছুটা সতর্ক ফুটবল খেলেছে। বল দখলে সামান্য এগিয়ে ছিল হংকং (৫৪%-৪৬%), কিন্তু কোনো দলেরই বড় ধরনের আক্রমণ দেখা যায়নি। ৪২ মিনিটে হঠাৎ করেই ম্যাচে প্রাণ ফেরে, যখন হংকং বাঁ পাশ থেকে আক্রমণ করে ফার্নান্দোকে ডি-বক্সের ভিতরে ফাউল করতে বাধ্য করে। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টি দেন এবং ম্যাথিউ ওর স্পট কিকে গোল করে স্বাগতিকদের এগিয়ে নেন। প্রথমার্ধ শেষ হয় হংকংয়ের ১-০ লিডে।
দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই বাংলাদেশ কিছুটা আক্রমণাত্মক হয়ে মাঠে নামল। সাদ উদ্দিন ডান পাশ থেকে দারুণ দৌড়ে বক্সে ঢুকে ভালো সুযোগ তৈরি করলেও হংকং গোলকিপার তৎপর হয়ে বল দখল করেন। ৬৭ এবং ৬৯ মিনিটে বাংলাদেশ আরও দুটি সুযোগ পায়, তবে হংকং গোলকিপার দারুণ প্রতিরোধ করেন এবং সমতা ফেরানো সম্ভব হয় না।
৭৫ মিনিটে হংকংয়ের ডিফেন্ডার অলিভার গারবিগ দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পান এবং মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। ১০ জনের বিপক্ষে সুযোগ পেয়ে বাংলাদেশ খেলোয়াড়রা সর্বোচ্চ চেষ্টা শুরু করে। ৮৩ মিনিটে বাঁ পাশ থেকে ফাহিমের দারুণ ক্রসে ফাহমিদুল হেড করলেন, বক্সে বল পাঠালেন। সেখানে রাকিব হোসেন পেয়ে শট নেন এবং হংকং গোলকিপার সেই শট আটকাতে ব্যর্থ হন। অবশেষে ১-১ সমতা ফিরিয়ে আনে বাংলাদেশ।
ম্যাচের শেষ দশ মিনিটে পুরো নিয়ন্ত্রণ ছিল বাংলাদেশের হাতে। হামজা চৌধুরী, শমিত সোম, সাদ উদ্দিন এবং অন্যান্য খেলোয়াড়রা বেশ কয়েকটি আক্রমণ গড়ে তুললেও জালের দেখা পায়নি। হংকং সময় নষ্ট করে শেষ পর্যন্ত সমতা ধরে রাখে।
বাংলাদেশের একাদশে ছিলেন: মিতুল মারমা (গোলরক্ষক), তারিক কাজী, তপু বর্মণ, শাকিল আহাদ, সাদ উদ্দিন, জায়ান আহমেদ, হামজা চৌধুরী, শমিত সোম, সোহেল রানা, রাকিব হোসেন এবং শেখ মোরছালিন।
ড্রয়ের ফলে বাংলাদেশ এখনও গ্রুপে পয়েন্টের দিক থেকে পিছিয়ে। হংকং ৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকলেও বাংলাদেশ এক পয়েন্ট নিয়ে শেষ দিকে। শেষ দুটি ম্যাচে ভালো ফল পেলে কিছুটা আশা বাঁচানো সম্ভব, তবে শেষ পর্যন্ত এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব পার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে এসেছে।
ম্যাচ শেষে কোচ এবং খেলোয়াড়রা বলেছে, “দ্বিতীয়ার্ধে যে দৃঢ়তা ও আক্রমণাত্মক ফুটবল দেখানো হয়েছে, তা ইতিবাচক। যদিও জিততে পারিনি, তবে খেলোয়াড়দের মানসিকতা ভবিষ্যতের জন্য শক্তি যোগাবে।”
এভাবে ম্যাচটি শেষ হলো, বাংলাদেশ সমতা নিয়ে মাঠ ছাড়ল, তবে জয় মিস হওয়ায় হতাশা রয়ে গেল লাল-সবুজ ভক্তদের মধ্যে।