২০১৮ বিশ্বকাপে স্পেনের প্রথম ম্যাচের দুই দিন আগে যাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল, সেই কোচ হুলেন লোপেতেগিই এবার কাতারকে পৌঁছে দিলেন ২০২৬ বিশ্বকাপে।
আরেকটি বিশ্বকাপ, আরেকটি নতুন সূচনা। একসময় যে বিশ্বকাপ শব্দটা লোপেতেগির মনে ব্যথার জন্ম দিত, আজ সেটিই এনে দিয়েছে আনন্দের পরশ। কাতারকে ইতিহাস গড়ে বিশ্বকাপে তুলে দিয়ে স্প্যানিশ এই কোচ এখন যেন স্বপ্নভঙ্গের অতীত ভুলে যাওয়ার পথে।
মঙ্গলবার সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ২-১ গোলে হারিয়ে কাতার নিশ্চিত করেছে ২০২৬ বিশ্বকাপের মূলপর্ব। আগেরবার স্বাগতিক হিসেবে অংশ নেওয়া দলটি এবার প্রথমবারের মতো বাছাই পেরিয়ে খেলবে ফুটবলের মহাযজ্ঞে।
ম্যাচ শেষে খেলোয়াড়রা যখন মাঠে উল্লাসে মাতলেন, তখন লোপেতেগি ফিরে গেলেন সাত বছর আগের সেই দুঃস্বপ্নে।
তার কোচিংয়ে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা স্পেন ২০১৮ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে অপরাজিত ছিল—১০ ম্যাচের ৯টি জিতেছিল, ড্র হয়েছিল একটি। দলটি করেছিল ৩৬ গোল, হজম করেছিল মাত্র ৩। অথচ বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক আগে জানা গেল, টুর্নামেন্ট শেষে রিয়াল মাদ্রিদের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন লোপেতেগি। শুরু হয় বিতর্ক, আর বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের দুই দিন আগে হঠাৎ করেই চাকরি হারান তিনি।
১৯৯৪ বিশ্বকাপে স্পেন স্কোয়াডে থাকলেও খেলার সুযোগ পাননি তিনি। এরপর কোচ হিসেবেও বিশ্বকাপের স্বাদ মেলেনি। তাই এবার কাতারের সঙ্গে সেই দীর্ঘদিনের আক্ষেপ ঘুচেছে অবশেষে।
৫৯ বছর বয়সী এই কোচ বলেন,
“মনে হচ্ছে জীবনে আমার একটি বিশ্বকাপ পাওনা ছিল। অবশেষে সেই সুযোগ এলো। আমি সবসময়ই চেয়েছিলাম আবার একটি বিশ্বকাপে পৌঁছাতে, আর কাতারে যোগ দেওয়ার অন্যতম কারণ সেটিই।”
তিনি আরও যোগ করেন,
“কয়েক বছর আগে যা ঘটেছিল, তার পর এই মুহূর্তটা আমার জন্য বিশেষ। কাতারের হয়ে এবার সেই স্বপ্নের মঞ্চে পা রাখার সময় এসেছে।”
রিয়াল মাদ্রিদে তার সময়টা অবশ্য খুব স্বল্পস্থায়ী ছিল—মাত্র তিন মাস পরই বরখাস্ত হন বাজে ফলাফলের কারণে। এরপর সেভিয়া, উলভারহ্যাম্পটন ও ওয়েস্ট হ্যামের কোচ হিসেবে কাজ করার পর গত মে মাসে আবার জাতীয় দলে ফেরেন, এবার কাতারের দায়িত্বে।
দলের ঐতিহাসিক সাফল্যের পর লোপেতেগি জানালেন তার আবেগের কথা—
“এই মুহূর্তটির জন্য আমরা মাসের পর মাস কঠোর পরিশ্রম করেছি। অবশেষে স্বপ্নটা পূরণ হলো। কাতারের জন্য এটি এক ঐতিহাসিক দিন—আগে কখনো এমন কিছু অর্জন করা যায়নি। এই অনুভূতিটা অসাধারণ, আমরা সত্যিই খুব খুশি।”