গত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পেনাল্টিতে ব্যর্থ হওয়া মুহূর্তটিকে হ্যারি কেইন নিজের জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময় হিসেবে মনে করছেন।
মাঠে নামলেই গোলের ঝড় তোলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। ক্লাব হোক বা জাতীয় দল, গোল করা তার জন্য এখন নিয়মিত ব্যাপার। নিজেই বলছেন, ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে আছেন তিনি। কিন্তু স্বপ্নের সাফল্যের মাঝেও একটি দুঃস্বপ্ন তাকে তাড়া করে—গত বিশ্বকাপে পেনাল্টিতে গোল করতে না পারার ব্যর্থতা। সেই অধ্যায়কে পুরোপুরি মুছে ফেলতে এবং নিজের ক্ষত সারাতে আগামী বিশ্বকাপে ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে চান কেইন।
মঙ্গলবার লাটভিয়াকে ৫-০ গোলে হারিয়ে ইংল্যান্ড নিশ্চিত করেছে আগামী বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা কেইন করেছেন দুই গোল।
বাছাইপর্ব শেষ হওয়ার পর কেইনের মন এখন পুরোপুরি আগামী বছরের বিশ্বকাপে। তবে স্মৃতিতে লেগে আছে তিন বছর আগের কোয়ার্টার-ফাইনাল। ফ্রান্সের বিপক্ষে সমতা ফিরিয়েছিল ইংল্যান্ড, কিন্তু দ্বিতীয় পেনাল্টি তিনি ওপরে মারায় গোল হয়নি। ফ্রান্স ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত জিতে নেয় ২-১ গোলে।
সাধারণত পেনাল্টিতে সর্বোচ্চ নির্ভরযোগ্য কেইন। চলতি মৌসুমে কোনো পেনাল্টিতে ব্যর্থ হননি। এজন্যই ২০১৮ সালের ব্যর্থতা আরও বেশি ব্যথা দেয়, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান।
“সেটি জীবনের সবচেয়ে বাজে অনুভূতি ছিল। ফাইনাল হারলেও, ওই দায়িত্ব আমার উপর পড়ায় মনে হচ্ছিল সব আশা আমার ওপর। যে কাজটি বহুবার করেছি, সেটিই তখন করতে না পারা… সেটা হজম করা সবচেয়ে কঠিন ছিল।”
পেশাদার জীবনের নিয়মে আগিয়ে তাকিয়েছেন কেইন। পুরনো আঘাতের দাগ এখনও পুরোপুরি মেটে নি, তবে ক্ষত শুকিয়ে গেছে। আগামী বিশ্বকাপের ট্রফিই হতে পারে তার যন্ত্রণার একমাত্র উপশম।
“এখন অতটা ভাবি না। বড় টুর্নামেন্টের পর এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা থাকে। ইউরোর সেমি-ফাইনালেও চাপ কম ছিল না, তবু গোল করেছি। কিন্তু গত বিশ্বকাপের স্মৃতি মনে আসলে… হ্যাঁ, আমি আগামী বিশ্বকাপে তাকিয়ে আছি, এটি শুধরে দিতে এবং আরও এগিয়ে যেতে। সেই পথে স্বপ্ন দেখি ট্রফি উঁচিয়ে ধরার। এই ধরনের মুহূর্ত মানুষ ও ফুটবলার হিসেবে সমৃদ্ধ হতে সাহায্য করে এবং আমাকে আরও ভালো খেলোয়াড় করেছে।”
গত মৌসুমে বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে বুন্ডেসলিগা জয় করা কেইন নতুন মৌসুম শুরু করেছেন অসাধারণ ফর্মে। ক্লাব ও দেশের হয়ে মাত্র ১৩ ম্যাচে করেছেন ২১ গোল। ইংল্যান্ডের হয়ে তার গোলসংখ্যা বেড়ে ৭৬।
এবার তার চোখ একশর দিকে। ৩২ বছর বয়সী এই তারকা বিশ্বাস করেন, তিনি সহজেই পৌঁছে যেতে পারবেন।
“আমার মনে হয় এটি নাগালের মধ্যে। ক্যারিয়ারের সেরা ফুটবল খেলছি, যতদিন সম্ভব ধরে রাখতে চাই। এখন ৭৬ গোল, আর কেবল ২৪টি দরকার। বিশ্বকাপের আগে কিছু ম্যাচ আছে, এরপর চেষ্টা থাকবে একশর দিকে পৌঁছানোর।”