৯২ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা আম্পায়ারদের একজন হ্যারল্ড ডেনিস ‘ডিকি’ বার্ড। প্রথম তিনটি বিশ্বকাপের ফাইনালে দায়িত্ব পালন করা এই কিংবদন্তি ইংলিশ আম্পায়ার মঙ্গলবার ইয়র্কশায়ারের নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছে ক্লাবটি।
১৯৫৬ সালে ইয়র্কশায়ারের হয়ে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে পেশাদার ক্রিকেটে পথচলা শুরু করেন বার্ড। পরে ২০১৪ সালে একই ক্লাবের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। আট বছরের খেলোয়াড়ি জীবনে ৯৩টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ২০.৭১ গড়ে ৩ হাজার ৩১৪ রান করেন, যার মধ্যে আছে ২টি সেঞ্চুরি ও ১৪টি হাফসেঞ্চুরি। দুই লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে তার সংগ্রহ ছিল মাত্র ৯ রান।
খেলোয়াড়ি জীবন শেষে আম্পায়ারিংয়ে মন দেন ডিকি বার্ড। ১৯৭০ সালের মে মাসে পেশাদার আম্পায়ার হিসেবে অভিষেক হয় তার। দীর্ঘ তিন দশকের ক্যারিয়ারে ৬৬টি টেস্ট, ৬৯টি ওয়ানডে এবং মেয়েদের সাতটি ওয়ানডেতে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়া ৪৭টি প্রথম শ্রেণি ও ১৯২টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচেও ছিলেন আম্পায়ার।
সময়ানুবর্তিতার জন্য বিখ্যাত বার্ডের একটি ঘটনা কিংবদন্তি হয়ে আছে। আম্পায়ার হিসেবে দ্বিতীয় ম্যাচে লন্ডনে যেতে হয় তাকে। ওভালে সারে-ইয়র্কশায়ারের ম্যাচ শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল ১১টায়, কিন্তু তিনি মাঠে পৌঁছে গিয়েছিলেন সকাল ৬টায়। তালাবদ্ধ মাঠে ঢোকার চেষ্টা করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন।
১৯৯৬ সালে লর্ডসের ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আম্পায়ারিং ক্যারিয়ারের ইতি টানেন তিনি। দুই দলের ক্রিকেটারদের ‘গার্ড অব অনার’ পেয়ে চোখে জল নিয়ে মাঠে নামেন বার্ড, আর প্রথম ওভারেই আউট দেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইক আথারটনকে। সেটিই ছিল সৌরভ গাঙ্গুলি ও রাহুল দ্রাবিড়ের অভিষেক টেস্ট।
১৯৯৫ সালের ২৬ মে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচটি ছিল তার শেষ ওয়ানডে। এরপর ২০০০ সালে সবশেষ একটি অনানুষ্ঠানিক ওয়ানডেতে দায়িত্ব পালন করেন।
ক্রিকেটে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৬ সালে এমবিই (মেম্বার অব দ্য অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার) এবং ২০২১ সালে ওবিই (অফিসার অব দ্য অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার) খেতাব পান ডিকি বার্ড।